ইনোভেটিভ নেতৃত্বে ঈর্ষনীয় অর্জনগুলো কারণ:অগ্রণী ব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে হীন ষড়যন্ত্র

প্রকাশিত: ২:৩৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ১, ২০২২

ইনোভেটিভ নেতৃত্বে  ঈর্ষনীয় অর্জনগুলো কারণ:অগ্রণী ব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে হীন ষড়যন্ত্র

মোঃ আতাউর রহমান

অগ্রণী ব্যাংকে সকলের প্রিয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও মোহাম্মদ শামস্-উল ইসলাম ১৯৮৪ সালে সিনিয়র অফিসার ( ফিন্যান্সিয়াল এনালিস্ট) হিসাবে যোগদান করেন। এরপর সময়ের পরিক্রমায় পদোন্নতির ধাপগুলো অতিক্রম করে প্রথমে রাষ্টমালিকানাধীন আনসার – ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের এমডি এবং সিইও হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ২০১৬ সাল থেকে অদ্যাবধি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কতৃক অর্পিত দায়িত্ব অর্থাৎ অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন অত্যন্ত নিষ্ঠা এবং আস্থার সাথে। তিনি ব্যাংকের একটি ক্রান্তিকাল সময়ে দায়িত্বভার গ্রহণ করলেও এই সময়ে তার অর্জনগুলো সত্যিকার অর্থেই ঈর্ষনীয়।

প্রথমতঃ দায়িত্ব গ্রহন করার পরপরই তিনি ভঙ্গুর ব্যাংকটির মুনাফা অর্জনে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করেছেন। জুন ক্লোজিংয়ে ব্যাংকের তেমন কোনো ব্যবসায়িক সাফল্য না থাকলেও ডিসেম্বর ক্লোজিংয়ে অগ্রণী ৬০০ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হয়। শুধুমাত্র তাঁরই ইনোভেটিভ নেতৃত্বে এই অসম্ভব সম্ভব হয়েছে। যার ধারাবাহিক মুনাফা প্রবৃদ্ধি অর্জন এখনও চলমান।

দ্বিতীয়তঃ তিনিই ‘বঙ্গবন্ধু কর্নারে’র নন্দিত উদ্ভাবক। ২০০৯ সালে জিএম হিসাবে অগ্রণী ব্যাংক সিলেটের মৌলভীবাজার, ২০১৫ সালে এমডি এবং সিইও হিসেবে আনসার ভিডিপি- উন্নয়ন ব্যাংক এবং সর্বশেষ ২০১৬ সালে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের এমডি এবং সিইও হিসেবে প্রধান কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন তাঁকে এনে দিয়েছে একজন স্বপ্নদ্রষ্টা তথা নন্দিত উদ্ভাবকের মর্যাদা।

তৃতীয়তঃ অগ্রণী ব্যাংকের আমানত দায়িত্ব গ্রহন কালীন সময়ে ৪৯০০০ কোটি টাকা থেকে আজ ১০০০০০ ( এক লক্ষ) কোটি টাকা অতিক্রম করেছে। এমনকি ঋন এবং অগ্রীমের ক্ষেত্রেও গ্রাফিকালী রয়েছে অসাধারণ উন্নতি।

চতুর্থতঃ কোভিড – ১৯ প্রণোদনা ঋন বিতরণে অগ্রণী ব্যাংকের রয়েছে শতভাগ (১০০%) সফলতা এবং এ বিষয়ে তাঁর অভিব্যক্তি হলো- ‘মুনাফা নয় বরং করোনা কালীন সময়ে সকলকে নিয়ে একসাথে বাঁচতে চেয়েছি।’

আর এ জন্যই বাংলাদেশ ব্যাংক প্রশংসাপত্র দিয়ে তাঁকে এবং অগ্রণী ব্যাংককে সম্মানিত করেছেন।
পঞ্চমতঃ স্বপ্নের পদ্মা সেতু নিমার্ণে প্রয়োজনীয় সকল ডলার এককভাবে সরবরাহ করে শক্তিশালী করেছেন প্রধানমন্ত্রীর হাতকে পাশাপাশি কালের স্বাক্ষী করেছেন অগ্রণী ব্যাংক তথা দেশের সকলকে।
ষষ্ঠতঃ অতি সম্প্রতি প্রকাশিত তাঁর লেখা বই- গণমানুষের অর্থনীতি এবং বঙ্গবন্ধু’ একটি চমৎকার উপস্থাপনা।
সপ্তমতঃ কর্পোরেট কাস্টমার সংগ্রহ এবং যথাযথ সেবা প্রদানের মাধ্যমে ব্যাংকের মুনাফা অর্জনে তিনি সদা জাগ্রত একজন নির্বাহী প্রধান।

রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে চালু করেন ৩% প্রণোদনা প্যাকেজ যা আজ রাষ্ট্র কতৃক স্বীকৃত এবং বর্তমান সময়ে অগ্রণী ব্যাংক রেমিট্যান্স আহরনে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের মধ্যে প্রথম।
রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রথম এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রমও তিনিই চালু করেছেন।
মোবাইল ব্যাংকিং সেবা পাওয়ার জন্য চুক্তি করেন bkash এর সাথে।
মুনাফা প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য চালু করেছেন ই-চালান যেটি তাঁর একটি অন্যতম ইনোভেটিভ অর্জন বলে ব্যাংকের সকলে মনে করে। কেননা চালানের আগে এককভাবে এটি সোনালী ব্যাংক করতো (রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর মধ্যে)। মতিঝিলে ব্যাংকের ২ নাম্বার (দ্বিতীয়) ভবন নির্মাণ আজ আমাদের সকলের নিকট একটি দৃশ্যমান উন্নয়ন। ব্যাংকের সিনিয়রদের প্রতি রয়েছে তাঁর অগাধ শ্রদ্ধাবোধ। আর তাইতো দেখতে পাওয়া যায় ১৯৫৭ সালের হাবিব ব্যাংকের কর্মকর্তা এবং পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ষষ্ঠ গভর্নর লুৎফর রহমান সরকারের নামে প্রধান কার্যালয়ের ৫ম তলার নামকরণ- ‘এল আর সরকার এক্সিকিউটিভ ফ্লোর’। কি এক অসীম কৃতজ্ঞতাবোধ থেকে তিনি এটি করেছেন!

নবমতঃ অগ্রণী ব্যাংকের
একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে জাতির পিতার জন্মশতবর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যাংকের পক্ষ হতে মাইক্রোবাস উপহার তাঁর

উদার মনের দৃষ্টান্ত বলেই মেনে নিতে হয়। অগ্রণীর নির্বাহী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য একটা এম্বুলেন্সের ব্যবস্থাও নিঃসন্দেহে তাঁর

প্রশংসনীয় উদ্যেগ। এই ব্যাংকে কেন্দ্রীয়ভাবে ‘নারী দিবস’ উদযাপনকে তিনি নারী সহকর্মীদের প্রতি সম্মান জানানোর একটি সুন্দর মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ব্যাংকের সকল সংগঠনের নেতাদেরকে ঋন রিকভারির কাজে অন্তর্ভুক্ত করণও একটি মাইলফলক উদ্যেগ। অসাসাস – অগ্রণী সাহিত্য এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতি তাঁর পৃষ্ঠপোষকতার জন্যই অনেক সৃষ্টিশীল ব্যাংকাররা মেধা মননের পরিচর্যা করতে পারছে।

নির্বাহী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদেরকে কেন্দ্রীয়ভাবে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো কিংবা বিশেষ দিনগুলোতে শুভেচ্ছা জানানো একটি ব্যতিক্রম উদ্যেগ। স্টাফ হাউজ বিল্ডিং লোনের সিলিং ১ কোটি টাকায় উন্নীত করন, উৎসাহ বোনাস অন্য ব্যাংকের তুলনায় বেশি প্রদান, সিপিএফ থেকে জিপিএফ প্রনয়ণ, কম্পিউটার লোনের সুদের হার ব্যাংক রেট বা ৪% নির্ধারণ, পদোন্নতির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার প্রতিফলন, সর্বোপরি কর্মচারী ঋন এবং অগ্রীম সমূহের অপরিশোধিত আসল ও সুদ মওকুফ সংক্রান্ত নীতিমালা – ২০২১ প্রনয়ন একজন কর্মীবান্ধব নির্বাহীর প্রতিচ্ছবি তুলে ধরে বলেই সকলের দৃঢ় বিশ্বাস।

দশমতঃ অগ্রণী ব্যাংকের জিএম সামশুল আলম (বৈবাকশা, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড) প্রায়শই বলে থাকেন-‘ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও একজন কর্মদক্ষতা মূল্যায়নকারী স্বপ্নবাজ মানুষ। জিএম স্যার আমাদেরকে আরও একটি শিক্ষা দিয়েছেন- প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী প্রধানকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা মানে নিজেকেও সম্মানিত করা।

কিন্তু অতি সম্প্রতি এর কিছু ব্যত্যয় দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। অগ্রণী ব্যাংককে খাদের কিনারা থেকে দিনে দিনে সফলতার চূড়োয় তুলে আনা ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস্-উল ইসলামের দূর্নীতি খোঁজার নামে অপচেষ্টা সত্যিই নিন্দনীয়। সরাসরি বলা চলে- এটি ব্যাংক সেক্টরকে পঙ্গু করার হীন ষড়যন্ত্র। ব্যবস্থাপনা পরিচালকের তুখোড় নেতৃত্বে অগ্রণী ব্যাংক যখন সত্যিই অগ্রগামী ঠিক তখনই

সাংবাদিকতার নামে হলুদ সাংবাদিকতা কিংবা অনলাইন পত্রিকার ভুলে ভরা তত্ত্ব আর তথ্য নিয়ে রিপোর্ট উপস্থাপন বিব্রতকর। এটি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করবে। অতীতেও মোহাম্মদ শামস্-উল ইসলামের দূর্নীতি খোঁজার অপচেষ্টা চলেছে, বৃথা চেষ্টায় কেউই সফল হয়নি।

এবারও তাঁর অপরাধ পাবার আগেই ফলাও করে মনগড়া সব তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ যেমন এগিয়ে যাচ্ছে তেমনিভাবে অগ্রণীর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের যথাযথ নেতৃত্ব ব্যাংকের অসামান্য

উন্নয়ন ধারা অনেকেরই গাত্রদাহ করছে। পরিশেষে পদোন্নতির সংখ্যা বৃদ্ধিসহ প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতায় অগ্রণীর অবিরত অগ্রযাত্রার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবেই, এটাই প্রত্যাশা।

লেখকঃ ব্যাংকার

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ