কাস্টমসের অযাচিত হয়রানি বন্ধ এবং পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধে ,আসন্ন রমজানে নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখার আশ্বাস

প্রকাশিত: ১১:৩৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৮, ২০২৩

কাস্টমসের অযাচিত হয়রানি বন্ধ এবং পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধে ,আসন্ন রমজানে নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখার আশ্বাস

বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই)। বাজারে পণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখতে ব্যাংকগুলোকে ঋণপত্র খুলতে পর্যাপ্ত ডলার ব্যবস্থা রাখা, কাস্টমসের অযাচিত হয়রানি বন্ধ এবং পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।

এ সময় অসাধু ব্যবসায়ীদের জেলে পাঠাতে সহযোগিতা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে এফবিসিসিআই।

সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই ভবনে রোজায় নিত্যপণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম স্থিতিশীল রাখতে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়, সেখানে ব্যবসায়ীরা এই আশ্বাস দিয়েছেন। এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে সভায় কাঁচাবাজার, পেঁয়াজ, তেল, লবণ, চিনি, ফল আমদানিকারকরা অংশ নেন।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই বলেছে, এক শতাংশের কম ব্যবসায়ীর জন্য পুরো ব্যবসায়ী সমাজের বদনাম হয়। যেসব ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরি করে সাপ্লাই চেইনে বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করবে তাদের পক্ষে নেবে না।

স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুব আলম বলেন, ব্যবসায়ীরা দেশের প্রাণ। ব্যবসায়ীরা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে, তাই দেশ এত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের একটা দায়িত্ব আছে দেশের জন্য, জনগণের জন্য। ব্যবসায়ীরা মুনাফা করবে এটা স্বাভাবিক। কেউ লস করে ব্যবসা করবে না। কিন্তু অনৈতিক মুনাফাও মেনে নেওয়া হবে না। দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, এক শতাংশের কম ব্যবসায়ীর জন্য পুরো ব্যবসায়ী সমাজের বদনাম হয়। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে এরা ফায়দা লুটছে। ভারত ঘোষণা দেওয়ার পরপরই দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কীভাবে বাড়ে?

মাহবুবুল আলম বলেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে পণ্যের দাম বেড়ে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বলা হয় ডলার মূল্য ১১০ টাকা কিন্তু এলসি খুলতে ডলার ১২০-১২২ টাকা রাখা হয়। তাছাড়া দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণে রাখতে অর্থ, বাণিজ্য, কৃষি ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় জরুরি বলে মনে করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ২০১৩ সালে হরতাল-অবরোধের কারণে প্রতিদিন যেখাতে ২ থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হতো, এখন সেখানে প্রতিদিন ৬ থেকে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগে নিত্যপণ্যের সঠিক পরিসংখ্যান থাকা জরুরি। কোন পণ্যের চাহিদা কত তা নিরূপণ করতে হবে। প্রয়োজনে ভোগ্যপণ্যের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় করা যেতে পারে। যেখানে ভোগ্যপণ্য উৎপাদন বা আমদানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা তাদের সমস্যার কথাগুলো জানাতে পারেন।

কাঁচামাল আড়তদার মালিক সমিতির সভাপতি ইমরান মাস্টার বলেন, সুষ্ঠু বিপণন ব্যবস্থার অভাবে বাজারে এ ধরনের অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি হয়। তবে আগামী রমজান শীত মৌসুমে হওয়ায় বাজারে শাকসবজির সংকট সৃষ্টি হবে না বলে মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি নূরুল কবির জানান, কুয়াশা ও ঠান্ডাজনিত কারণে লবণ উৎপাদন একটু ব্যাঘাত ঘটলেও বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বাজারে লবণের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে।

খাদ্য নিরাপত্তার অজুহাতে বাজারে খোলা তেল বিক্রি বন্ধের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করে বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা বলেন, খোলা তেল দীর্ঘদিন ধরে চললেও এখন কেন তা বন্ধের আলোচনা চলছে। খোলা তেল বিক্রি বন্ধ করলে স্বল্প আয়ের মানুষ চাপে পড়বে।

বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান আমলা কর্তৃক নয়, ব্যবসায়ীদের এখন পলিসি নির্ধারণ করার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ