তারা নির্বাচন বানচাল করতে চায়। মানুষকে ভোট দিতে দেবে না -প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১:২৭ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২১, ২০২৩

তারা নির্বাচন বানচাল করতে চায়। মানুষকে ভোট দিতে দেবে না -প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ মানুষকে ভোট দিতে দেবে না। মানুষ কিন্তু ভোটের পক্ষে, মানুষ নির্বাচনের পক্ষে। মানুষ হরতালে সাড়া দিচ্ছে না, মানুষ বরং ভোটের মিছিলে যোগ দিচ্ছে।’

অগ্নিসন্ত্রাসের বিষয় উল্লেখ করে এসময় তিনি বলেন, ‘যারা অগ্নিসন্ত্রাসে জড়িত তাদের কারো ক্ষমা নাই। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা আমরা নেবোই।’

বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সিলেট সফরে এসে দুপুরে হযরত শাহজালাল (র.) মাজার জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় তাঁর পাশে সিলেট ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহানা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ যাতে ভোট কেন্দ্রে না যায় সেজন্য ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘তারা নির্বাচন বানচাল করতে চায়। মানুষকে ভোট দিতে দেবে না। মানুষ কিন্তু ভোটের পক্ষে, মানুষ নির্বাচনের পক্ষে। মানুষ হরতালে সাড়া দিচ্ছে না, মানুষ বরং ভোটের মিছিলে যোগ দিচ্ছে। তাহলে এরপর আবার কেন এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড-এটি আমার প্রশ্ন। এতে তাদের কী অর্জন হবে। তারা তো জনগণ ধারা আরো ধৃকৃত হবে।’

এসময় অগ্নিসন্ত্রাসের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘যারা নির্বাচন করবে না, করবে না। কিন্তু মানুষ পুড়িয়ে মারা, আগুন দিয়ে সরকারি সম্পদ নষ্ট করা, এটা তো জনগণের সম্পত্তি। নতুন নতুন কোচ কিনে নিয়ে এসেছি, নতুন রেল, সে রেল লাইনের ফিসপ্লেট তুলে ফেলে মানুষ হত্যা করা এটা সম্পূর্ণ সন্ত্রাসী কাজ, জঙ্গীবাদি কাজ। আর সে সন্ত্রাসী-জঙ্গীবাদি কাজ করে যাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত জোট।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপির এই একটাই কাজ-আমরা ২০১৩তে দেখেছি, ২০১৪তেও দেখেছি-মানুষ পুড়িয়ে মারা।’ তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এটা কোন ধরণের আন্দোলন, গতকাল যেটা ঘটেছে। তারা হরতাল দিয়েছে, এদেশের মানুষ তাদের হরতাল মানেও না। সাড়াই দেয়নি।’

মানুষ নির্বাচন চায় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এদেশের মানুষ নির্বাচন চায়, ভোট দিতে চায়। আমরা ভোটের জন্য সম্পূর্ণ উন্মুক্ত করে দিয়েছি, আমাদের দলকেও। বলেছি, ঠিক আছে, সবাই দাঁড়াবে, সবাই কাজ করবে। জনগণ যাদের বেছে নেবে, তারা আসবে। কিন্তু সেখানে আমরা কি দেখলাম, রেলে আগুন দিল। একটা মা সন্তানকে নিয়ে সে আগুনে পুড়ে মারা গেল। মা সন্তানকে কিন্তু বুকের মধ্যে চেপে রেখে দিয়েছে। মানে, এর চেয়ে কষ্টের দৃশ্য আর কিছু হতে পারে না।’

সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে এসময় তিনি বলেন, ‘সিলেটে কিন্তু এখন আর কোনো ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষ নাই। প্রত্যেকটি মানুষকে আমরা ঘর করে দিতে পেরেছি। কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়েছি। অর্থাৎ মানুষের যে মৌলিক চাহিদাগুলো তা আমরা পূরণ করে যাচ্ছি। যেগুলো বাকি আছে ইনশাল্লাহ আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ যদি নৌকা মার্কায় ভোট দেয়, আবার যদি সরকার গঠন করতে পারি এই পুরো বাংলাদেশটাকেই আমরা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ করব।’ তিনি বলেন, ‘কোনো মানুষই ঠিকানাবিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না। এটাই আমাদের নিয়ত। দুখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া।’

বক্তব্যের শেষের দিকে মৃদু হেসে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবার দেখা হবে। ‘আবার আসিব ফিরে এই সিলেটে…’। এবং সিলেটের নির্বাচনি জনসভায় উপস্থিত জনতাকে ‘আধুনিক সিলেট গড়তে’ বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক যোগাযোগ এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনে নৌকার প্রার্থী ড. একে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেসা হক, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সিলেট-৬ আসনের নৌকার প্রার্থী ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক, প্রধান মন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও অভিনেত্রী তারিন জাহানসহ সিলেট জেলা, মহানগর আওয়ামী লীগ,যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।

সভাটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উািদ্দন খান এবং সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন।

এসময় মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন শেখ হেলাল এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাজাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ, বাহা উদ্দিন নাছিম ও মাহবুবুল আলম হানিফ প্রমুখ।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ