আকষ্মিক বন্যার জন্য কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম, ইটনা, মিঠামইনের অপরিকল্পিত সড়ক নির্মাণকে দায়ী করেন সিলেটবাসী

প্রকাশিত: ৩:৫৪ পূর্বাহ্ণ, জুন ২৪, ২০২৪

আকষ্মিক বন্যার জন্য কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম, ইটনা, মিঠামইনের অপরিকল্পিত সড়ক নির্মাণকে দায়ী করেন সিলেটবাসী

আকষ্মিক বন্যার জন্য কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম, ইটনা, মিঠামইনের অপরিকল্পিত সড়ক নির্মাণকে দায়ী করেন সিলেটবাসী ও হাওরাঞ্চল নেতৃবৃন্দ।

শনিবার (২২ জুন) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হাওর অঞ্চলবাসী ঢাকা ও ঐক্যবদ্ধ সিলেট বিভাগবাসী’র যৌথ উদ্যোগে ক্যাপ্টেন (অবঃ) মিজানুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও মেনন চৌধুরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঐক্যবদ্ধ সিলেট বিভাগবাসীর সমন্বয়ক ও জালালাবাদ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আনহার সমশাদ।

বক্তব্য রাখেন হাওর অঞ্চলবাসীর সমন্বয়ক গবেষক ড. হালিম দাদ খান, বাপা’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক পরিবেশবাদী শরীফ জামিল, বাপা’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিহির দাস, হাওর বিশেষজ্ঞ বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার তোফায়েল আহমেদ খান, হাওর অঞ্চলবাসীর সমন্বয়ক জাকিয়া শিশির, সমন্বয়ক এড. আইনুন নাহার লিপি, সিলেট বিভাগ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি কাজী তোফায়েল আহমেদ।

বক্তরা বলেন, প্রাকৃতিক বন্যায় অতীতে কখনও সিলেটবাসী এতো জানমালের ক্ষতির সম্মুখীন হয়নি। মানবসৃষ্ট জলবদ্ধতার কারণে সিলেটবাসী ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। পবিত্র ঈদ-উল-আযহার নামাজ এবং নিয়ত করা কোরবানী সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে পারেনি।

বিশেষজ্ঞরা তাদের বক্তব্যে আকষ্মিক বন্যার জন্য কিশোরগঞ্জ, ইটনা, মিঠামইন সড়কের প্রতিবন্ধকতাকে দায়ী করেন।

তারা আরও বলেন, উন্নয়নের নামে লুটপাট বন্ধ করে হাওর বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে পরিকল্পিত উন্নয়ন, পরিবেশ ও হাওর রক্ষায় ভূমিকা রাখতে হবে। নদী খননের নামে নানারকম অনিয়ম-দূর্নীতি অব্যাহত রয়েছে। সকল অনিয়ম এবং দূর্নীতির সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। কিশোরগঞ্জের ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামকে যুক্ত করে নির্মিত অলওয়েদার সড়ককে এলিভেটেড করার দাবিও করা হয়।

বিশেষজ্ঞজনরা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সড়ক নির্মাণের শুরুতে বিশেষজ্ঞরা অন্তত: ৩০-৩৫ ভাগ এলিভেটেড করার পরামর্শ দিলেও অজ্ঞাত কারণে কর্তৃপক্ষ বিশেষজ্ঞ পরামর্শ এবং সিলেট অঞ্চলে বন্যায়, জলাবদ্ধতার ক্ষতির কারণ জেনেও হাওরের পানি প্রবাহের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, সিলেট এবং ময়মনসিংহের ৩৭৩টি হাওরে পানির অবাধ প্রবাহ প্রতিবন্ধকতায় প্রাকৃতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

বক্তারা বলেন, সরকারের ডেল্টাপ্লানে ও মাস্টারপ্লানে এই সড়কের অনুমোদন না থাকলেও কার স্বার্থে অপরিকল্পিত নির্মাণ প্রকল্প একনেকে পাশ করা হয়েছে জাতি জানতে চায়।

২০২২ সালে সিলেট ও সুনামগঞ্জে ভয়ংকরী বন্যা হলে সড়কটি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কেঁটে দেয়া হয়। কিছুদিন পর অযৌক্তিক তথ্য উপস্থাপন করে পূণরায় বাধঁ দিলে আবার পানি প্রবাহিত বন্ধ হয়ে যায়। গত ৩ বছর যাবৎ সিলেট অঞ্চলের ৪টি জেলা বন্যা কবলিত হয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ পানিবন্দী হয়ে জানমালের ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অতএব পরিকল্পিত কোনো উদ্যোগ গ্রহণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর একেবারে নিরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে ডেল্টাপ্লান ও মাস্টারপ্লান মোতাবেক কিশোরগঞ্জ, ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রামে সংযুক্ত সড়কটি পুণরায় হাওর উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় এনে পূনঃসংস্কারের দাবি জানানো হয়। এবং সিলেট বিভাগের নদী ও খাল খননের অনিয়ম খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেয়ার আহ্বান করা হয়। এছাড়া সিলেট বিভাগের নদী ও খাল খনন, কিশোরগঞ্জের নদী, খাল খনন, ময়মনসিংহের নদী, খাল খনন করে পানি প্রবাহের সুপথ তৈরীকল্পে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান ঐক্যবদ্ধ সিলেট বিভাগবাসীর ও হাওর অঞ্চলবাসী নেতৃবৃন্দ।

মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী এড. সুজা আল ফারুক, সিনিয়র সাংবাদিক হাওর গবেষক নিজামুল হক বিপুল, সিনিয়র সাংবাদিক জাকির হোসেন, সুয়েদুজ্জামান কামালী, ঢাকাস্থ মাধবপুর উপজেলা সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম চৌধুরী, ঢাকাস্থ শাল্লা উপজেলা সমিতির সাবেক সভাপতি হিরোদ রঞ্জন রায়, সিলেট বিভাগ যোগাযোগ উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন সোহেল, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ইনতেসার আহমেদ চৌধুরী, সায়েদুল হক চৌধুরী, নাজমুল হাসান, সোহেল সিকদার, মাহমুদ এজাজ, মোস্তাফিজুর রহমান, এহসানুল হক জসীম, গোলাম শফিক, মোঃ আব্দুল মান্নান চৌধুরী, লোকেশ রঞ্জন দাস, আবু বক্কর সিদ্দিক, শিপন আহমেদ,

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ